১৩ ফেব্রুয়ারী রহমান সাহেবের ৫৯ তম জম্মদিন,কোনো কিছু আয়োজন করে এখন আর রহমান সাহেবের জম্মদিন পালন করা হয় না।সংসারে সব সদস্যরা সবাই কাজে ব্যস্ত, রহমান সাহেবের জম্মদিনের বিষয় নিয়ে ভাবার সময় নেই কাহারো।তবে রহমান সাহেবের ৫৯ তম জম্মদিনে একমাত্র আমি তার সঙ্গি হিসাবে সাথে ছিলাম,যদিও আমার ইচ্ছে না থাকা সত্বে রহমান সাহেবের কাছে যেতে হয়েছে। ঢাকা শহরের বাড়িভাড়া বলে কথা। যেখানে দু’বার চোখ ভোজলে,বাড়িওয়ালদের টাকা দিতে হয়।তারপরও আমার দেখাতে রহমান সাহেব খুবেই ভাল মানুষ, তাই মাঝে মাঝে আড্ডা দেবার জন্য রহমান সাহেব কাছে আমি যাই ,যখন আমার মন খারাপ থাকে।কারণ অনেক শিখার আছে রহমান সাহেবের কাছে থেকে।আজ রহমান সাহেবের একটা কথা খারাপ লেগেছিল আমার...? মনে খুব কষ্ট নিয়ে বললেন,মাঝে মাঝে মনে হয়, যেন মরে গেলেই এখন বাচিঁ....? এখন আর সংসার ভাল লাগে না,আমার কেন জানি জানতে ইচ্ছে হলো, এরকম কথা আজ কেন বললেন? যদিও আমার দিক থেকে ঠিক হয়নি,তবে রহমান সাহেব খুব সহজে মেনে নিলেন, তিনি বলতে শুধু করলেন-রহমান সাহেবের প্রথম জীবন শুরু থেকে- আজ থেকে প্রায় ৩৭ বছর আগে ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম, আমার বাবা-মা’র অনুমতি ছাড়া,নিজে কতটুকু সুখি হয়েছি জানি না,তবে আমার বাবা-মা কখনো আমাকে নিয়ে সুখি ছিল না।আমি আমার বাবা মায়ের এক মাত্র সন্তান হিসেবে একটু বেশি ভালবাসা পেয়েছি।আমি যখন বিএ পড়তাম,তখনোও আমার মা আমাকে নিজের হাতের খাবার খাওয়াতেন, আমার খুব অহংকার হতো,পৃথিবীতে সবচেয়ে ভাল মা হলো আমার।কলেজ জীবনে মিসেস রহমানকে ভালবাসি আমি, বিএ পাস করার পর দুজন মিলে বিয়ে করি,বিয়ে করার সময় খুব খুশি ছিলাম আমি ,কিন্তু বাড়িতে এসে তখন বাবা মা’কে বললাম,তখন তাড়া খুব কষ্ট পেয়েছিল।তবে আমার খুশির জন্য তাড়া মিসেস কে মেনে নিয়েছিল। তারপর হঠ্যাৎ করে বাবার মুত্যৃ,সহজে মেনের নেওয়ার অবস্থান ছিল না আমার। খুব ভেঙ্গে পড়েছিলাম আমি,সংসার বলে আমার কোনো ধারণা ছিল না,সংসারের সব কিছু বাবাই দেখতেন,আমার চাকুরি কারণে বাড়ি থেকে বাহিরে থাকতে হতো, আর যখন মাঝে মাঝে যাওয়া হতো, তখন আমি বুঝেছিলাম আমার মা আজ অনেকটা পরিবর্র্তনশীল, খুব কম কথা বলে,জিজ্ঞাস করলেই কিছু বলেতো না, শুধু হ্যা অথবা না সূচক উত্তর দিতো, আমার প্রথম দিকে খুব কষ্ট হলেও তারপর মেনে নিলাম আমি.....?কারণ মিসেস বুঝালো বয়স হয়েছে, তাই কথা বলতে কষ্ট হয়,....? এই কথাটা আমিও খুব সহজে মেনে নিলাম.অনেক দিন পর আমি অনুধাবন করলাম মিসেস আর আমার মায়ের সর্ম্পকটা ভাল না, কারণ অকারণে মায়ের সাথে মিসেস খারাপ আচারন করে,আমাকে ভালবেসে সব কিছু মুখ বুঝে মেনে নিতেন মা।যেন আমি কষ্ট না পাই।খুব আদরের সন্তান হিসেবে মন হয় আমার এটাই পাওয়া ছিল।চাকুরি কারণে বাহিরে থাকতে হতো,একদিন রাতে বেলায় আমার বাড়ি থেকে লোক এসেছে আমার কাছে,আমাকে বাড়িতে নিয়ে যাবার জন্য,লোকটি দেখে কিছু বলতে পারলাম না আমি,শুধু বাড়িতে যাওয়ার অপেক্ষা ছিলাম,বাড়িতে গিয়ে নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি হলো আমার, মা আজ পানিতে পরে আত্নহত্যা করেছে, কেন আত্নহত্যা করলো কেউ কিছু বলেনি সেদিন, তবে একটা প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল সেদিন এতো বয়সে কেন মা আত্নহত্যা করলো। অনেক চেষ্টা পর জানতে পারলাম, আমার সুখের জন্য,মা আজ সব কিছু বির্জন দিল,তারপরও নিজের কষ্টের কথাগুলো কখনো অভিযোগ আকারে প্রকাশ করেনি,যদি নিজের সন্তান কষ্ট পায়।আজ প্রায় ২৯ বছর পরও আমি আমার মাকে খুব মিস করি, আর নিজের অপরাধবোধটা নিয়ে শুধু বেচেঁ আছি.............?
রহমান সাহেবের সাথে কথা বলে আমি কষ্ট পেলেও, যেন রহমান সাহেব আজ একটু হালকা সুখ অনুভব করছেন, নিজের কিছু কষ্টের কথা বলতে পেরে,আসলে মানুষের বাহিরে রুপ দেখে ভিতরের বিচার করা খুব কঠিন,আমি খুব একটা গান শুনি না,তবে মাঝে মাঝে শুনা হয়, কেন জানি মান্নাদে একটা গান শুনতে ইচ্ছে হলো আজ,ভালবেসে সুখি হতে,বলো কে না চায়, রাধা সুখি হয়েছিল নীল সেমরায়,আমি ভালবেসে যাবো, হয় কিছু পাবো, না হয় সব হারাবো,
তবে মা’কে ছেড়ে না........
লেখক-মোস্তাফিজুর রহমান (মোস্তাক)
(তারিখ-২১ মার্চ-২০১৮)
লেখক-মোস্তাফিজুর রহমান (মোস্তাক)
(তারিখ-২১ মার্চ-২০১৮)
No comments:
Post a Comment