বর্ষাকালে গরু বাছুরের কিছু বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এসময় সঠিক ভাবে যত্ন না নিলে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য তথা খামার ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন হুমকীর সম্মুখীন হয়। আমরা যদি এই সময়টাতে বিশেষ কিছু ব্যাবস্থা নেই তাহলে এই সমস্যা গুলি থেকে রেহাই পেতে পারি। নীচে সংক্ষিপ্ত ভাবে আমি কিছু দিক নির্দেশনা দিলাম।
১। এই সময়ে ভোরে গরুকে গোয়ালঘর থেকে বের করে গোয়ালঘর এবং গরু বাছুরকে পর্যায়ক্রমে ভালো ভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে।
২।গোয়ালঘরের মেঝে ও এর আশ পাশ ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে। এতে জীবাণু সংক্রমণ ঝুঁকি কমে যাবে।
৩। গাভী এবং ষাঁড় বা বলদ কে সম্ভব হলে পটাশের পানি দিয়ে লেজ এবং পা গুলি ধুইয়ে দিতে হবে। কারণ বর্ষায় ক্ষুরা রোগের প্রাদূর্ভাব দেখা দেয়।
৪। গরুকে দিনে অন্তত একবার গোছল করাতে হবে।
৫। খেয়াল রাখবেন গোয়ালঘর এর মেঝে যাতে সব সময় শুকনা থাকে।
৬। গোয়াল ঘরের আশ পাশটায় মাঝে মাঝে চুন ছিটিয়ে দিবেন।
৭। গরুর খাদ্য পাত্র গুলি ভালো ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন,সম্ভব হলে পটাশের পানি দিয়ে পরিষ্কার করবেন।এতে খাদ্যের মাধ্যমে জীবাণুর আক্রমনের ভয় থাকবে না।
৮। গরুকে বৃষ্টিতে ভিজতে দিবেন না,কারণ বৃষ্টিপাতের ফলে এমনিতেই আবহাওয়ার তাপমাত্রা কমে যায় ফলে গরু তার শরীরের তাপমাত্রায় সমতা বজায় রাখতে চেষ্টা করে এবং এই অবস্থায় বৃষ্টিতে ভিজলে সে সহজেই নিউমোনিয়া, জ্বর ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয়।
৯। গরুকে এই সময়ে বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন যেমন,ক্ষুরা,তড়কা,গলাফোলা ইত্যাদি দিতে হবে।
১০। গরুকে প্রাণবন্ত রাখার জন্য তাদের সুষম খাদ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে দিতে হবে।
১১। বর্ষাকালে গরুর খাদ্য সঠিক ভাবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে মওজুদ করতে হবে এবং খাদ্য সরবরাহ করার আগে লক্ষ্য রাখতে হবে তা যাতে ফাংগাস মুক্ত হয়।না হলে ওই খাদ্য খেয়ে গরুর বিষক্রিয়া হতে পারে।
১২। গরুকে যথাযথ ভাবে কৃমিনাশক ওষুধপাতি দিয়ে কৃমিমুক্ত রাখতে হবে।
১৩। গোয়ালঘরের চারপার্শ্বে এবং আংগিনা কিছুটা ঢালু করে দিতে হবে যাতে বর্ষায় পানি না দাঁড়ায় বা জমে।
উপরের বিষয় গুলির প্রতি জোড় দিলে আমরা আমাদের খামারের গরু বাছুর গুলি বর্ষা মৌসুমে জটিলতা বা বিপদ মুক্ত রাখতে পারবো আশা করি।
No comments:
Post a Comment